আর্টিকেল লেখায় উপায় ও কৌশল [১০টি]

আজকের এই পোস্টে আমরা জানবো কিভাবে একটা সুন্দর আর্টিকেল লিখতে হয় বা আর্টিকেল লেখার নিয়ম। এখানে আমরা মূলত দুইটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি, একটি হলো আকর্ষণীয় আর্টিকেল লেখার কৌশল এবং অন্যটি হলো আর্টিকেলের দৈর্ঘ্য সম্পর্কে। 

আর্টিকেল লেখায় উপায়

যেকোনো ওয়েবসাইটের জন্য কন্টেন্ট ইজ কিং আর ব্লগসাইটের জন্য আর্টিকেল ইজ কিং। তাই একটা ব্লগসাইটকে পাঠকের কাছে আকর্ষণীয় ও উপকারী করে তোলার জন্য প্রয়োজন ভালো, দৃষ্টিনন্দন ও ইউজার ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল। একটা আর্টিকেলকে ইউজার ফ্রেন্ডলি করার জন্য কিছু উপায় অনুসরণ করা যেতে পারে। সেগুলো হলোঃ

আর্টিকেলকে আকর্ষণীয় করার কিছু কৌশল

১. আর্টিকেল লেখার সময় সঠিক শব্দচয়ন (শব্দের ব্যবহার) খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একজন পাঠক আপনার আর্টিকেল সম্পূর্ণভাবে তখনই পড়বে যখন সে সেটা থেকে কিছু জানতে পারবে, সহজে বুঝতে পারবে। তাই আর্টিকেলকে পাঠকের পড়ার উপযোগী করে তোলার জন্য সহজ শব্দ ব্যবহার করুন, এমন কোনো গুরুগম্ভীর (কঠিন) শব্দ ব্যবহার করবেন না যেটা সব শ্রেনীর পাঠক আয়ত্ব (বুঝতে পারা) করতে পারে না। এটা হলো আর্টিকেল লেখার অন্যতম উপায়।

২. যদি এমন কোনো শব্দ ব্যবহার করতেই হয় যেটা পাঠকের বুঝতে সমস্যা হতে পারে তাহলে সেটার সহজ অর্থ ব্রাকেটে দিয়ে দিলে ভালো হয়। উপরের প্যারাগ্রাফে আমি কয়েকটা কঠিন শব্দ ব্যবহার করেছি,  সব শ্রেনীর পাঠক যেন শব্দগুলোর অর্থ বুঝতে পারে তার জন্য ব্রাকেটে শব্দগুলোর সহজ অর্থ দিয়ে দিয়েছি।

৩. একটা প্যারাগ্রাফ অনেক বেশি লম্বা করবেন না। যদি আর্টিকেলের ভেতরে লম্বা লম্বা প্যারাগ্রাফ থাকে তাহলে সেগুলো দেখলেই ভয় লাগে, মনে হয় যে হয়তো অনেক বেশি থিওরেটিকাল জিনিসপত্র লেখা হয়েছে এখানে। তাই যথাসম্ভব অল্প সংখ্যক শব্দ দিয়ে প্রতিটি প্যারাগ্রাফ লেখার চেষ্টা করবেন। আর প্যারাগ্রাফ ছোট ছোট হলে পড়তেও বেশ সুবিধা হয় সবার জন্য।

৪. আর্টিকেল লিখতে গেলে গল্প বলা শিখতে হবে। কঠিন বিষয়বস্তু সহজে বুঝানোর সহজ উপায় হলো উদাহরণ দেখানো বা কোনো গল্পের মাধ্যমে বিষয়টা ক্লিয়ার করা। গল্প বা উদাহরণের মাধ্যমে কোনো কিছু শিখলে ও জানলে আমাদের মাথায় তা দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী থাকে।

৫. ছবি অথবা ভিডিওর মাধ্যমে যেকোনো বিষয় খুব সহজেই মানুষকে বুঝানো যায়। তাই টেকনিক্যাল বা প্র‍্যাক্টিক্যাল কোনো আর্টিকেল লিখতে বসলে সেখানে উপযুক্ত ছবি বা ভিডিও ব্যবহার করতে হবে। আর চেষ্টা করবেন ছবি বা ভিডিও যাতে খুব বেশি ঘিজিমিজি টাইপের না হয়, যত মিনিমাল হবে বুঝতেও তত বেশি সহজ হবে।

আরও পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করার উপায়

ছোট আর্টিকেল বনাম বড় আর্টিকেল

আপনাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় ব্লগ সাইটের জন্য ছোট আর্টিকেল না কি বড় আর্টিকেল ভালো। আপনার উত্তর কী হবে? একেকজনের মতামত একেক রকম হতে পারে। কিন্তু আমাকে জিজ্ঞেস করলে আমি বলবো, যে ওয়েবসাইটের জন্য বড় আর্টিকেল ভালো ও উপকারী। আমার এটা বলার পেছনে কিছু কারণও আছে বটে। কয়েকটি কারণ নিচে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম।

১. আমাদের প্রায় সবারই জানা, যে গুগল অ্যাডসেন্স পেতে হলে কোয়ালিটি কন্টেন্ট প্রয়োজন। আর কোয়ালিটি কন্টেন্ট মানে হলো রিসোর্সফুল, প্ল্যাগারিজম ফ্রি বড় কন্টেন্ট। আপনি যদি ছোট ছোট আর্টিকেল দিয়ে গুগল অ্যাডসেন্সের জন্য অ্যাপ্লাই করেন তবে অ্যাপ্রুভাল না পাওয়ার সম্ভাবনাই ৯০% এর মতো।

আপনার সাইটে আর্টিকেলের শব্দ সংখ্যা যদি ১৫০০ বা ২০০০ এর বেশি হয় তাহলে অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি বেড়ে যায়। আর আর্টিকেল শুধু বড় হলেই হবে না, সেটা অবশ্যই প্ল্যাগারিজম ফ্রি, গ্রামাটিক্যালি কারেক্ট ও ভ্যালু ফর টাইম হওয়া প্রয়োজন।

২. আর্টিকেল বড় হলে আরেকটা সুবিধা পাওয়া যায় সেটা হলো ওয়েবসাইটের এঙ্গেজমেন্ট টাইম বৃদ্ধি পায়। আর্টিকেল যদি দীর্ঘ, তথ্যবহুল ও সুন্দর হয় তাহলে অধিকাংশ মানুষই সেটা অনেক সময় ধরে পড়বে। ছোট আর্টিকেলের চেয়ে বড় আর্টিকেল পড়তে বেশি সময় লাগে। আর এটা গুগলের রোবটকে পজিটিভ সিগন্যাল দেয় আপনার ওয়েবসাইট সম্পর্কে।

৩. আর্টিকেলের সাইজ বড় হলে সেটা গুগল সার্চ ইঞ্জিনে দ্রুত র‍্যাঙ্ক করে। তুলনামূলক বড় ও এসইও অপ্টিমাইজড আর্টিকেলগুলোকে গুগল বেশি প্রাধান্য দেয় কারণ সেখানে বিস্তারিত তথ্য থাকার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। আর গুগলে ওয়েবসাইট র‍্যাঙ্ক করানো মানেই বেশি পরিমাণে অর্গানিক ট্রাফিক গেইন করা।

৪. বড় আর্টিকেলে ছোট আর্টিকেলের তুলনায় বেশি পরিমাণ কিওয়ার্ড প্লেস করা যায়। শুধু ফোকাস কিওয়ার্ড ছাড়াও একাধিক কিওয়ার্ডে আর্টিকেল র‍্যাংক করার সম্ভাবনা থাকে এক্ষেত্রে। ফোকাস কিওয়ার্ডের বাইরেও অনেক কিওয়ার্ড লিখে সার্চ করলেও আর্টিকেল খুঁজে পাওয়া যায়।

আরও পড়ুনঃ ব্লগার ওয়েবসাইটের পোস্ট কপি করার বন্ধ করুন

৫. বড় আর্টিকেল পাবলিশ করার মাধ্যমে বিশ্বস্ততা বৃদ্ধি করা যায় পাঠকদের কাছে। ছোট আর্টিকেলের পরিবর্তে যখন একটা বিষয়ে বড় ও বিস্তারিত উল্লেখ করে একটা আর্টিকেল প্রকাশ করবেন তখন আপনার ওয়েবসাইটের পাঠকরা আপনাকে সহজেই বিশ্বাস করতে চাইবে যে আপনি লিখিত বিষয়ে ভালো জানেন। এতে করে সাইটে পাঠকের সংখ্যাও দিনে দিনে বৃদ্ধি পায়।

এই ছিলো আমাদের আজকের পোস্ট। আগামী পোস্টে আমরা আর্টিকেল লেখায় উপায় সম্পর্কে আরো জানবো। কীভাবে এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখতে হয় সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। আগামী পোস্টগুলো পড়ার অনুরোধ রইলো।

আরও পড়ুনঃ ব্লগারে বাংলা ফন্ট যুক্ত করার নিয়ম

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন